সজিব খান: গত ১১ বছরে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সরকারি দলের নেতা, আমলা ও সরকার সংশ্লিষ্টদের প্রায় ২ হাজার ব্যাক্তিকে দায়মুক্তি দিয়েছে। অথচ বিরোধী রাজনীতিক ও চুনপুটিরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রেহাই পাননি। পাশাপাশি দুদক কখনোই কাউকে হোমড়া-চোমড়া চূড়ান্ত শাস্তির আওতায় আনতে পারেনি।
পরিসংখ্যান বলছে ২০০৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ২ হাজার প্রভাবশালীকে দায়মুক্তি দিয়েছে দুদক। তাদের মধ্যে সরকারদলীয় সদস্য আসলামুল হক, এনামুল হক, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হকসহ শতাধিক রাজনীতিক ও প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে চার্জশিট না দিয়েই মামলা থেকে অব্যাহতি দেয় দুদক।
ক্ষমতাবান আমলাদেরও ছিলো দায়মুক্তির হিড়িক। নিয়োগে দুর্নীতির প্রমাণ পেয়ে দুদক মামলা দায়ের করলেও পরে অব্যাহতি দেওয়া হয় পেট্রোবাংলার সাবেক চেয়ারম্যান হোসেন মনসুরকে। সাবেক প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব খোন্দকার শওকত হোসেনকেও দেওয়া হয় দায়মুক্তির সনদ। এছাড়া অনুসন্ধান পর্যায়ে অব্যাহতি দেওয়া হয় ঢাকা ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খান, আনন্দ শিপইয়ার্ডের মালিক আবদুল্লাহিল বারী, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান নূরুল হুদাসহ বিভিন্ন প্রভাবশালীকে।
দুদকের নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, তথাকথিক রুই-কাতলা জনিত দুর্নীতির সাথে যার জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে এমন দৃষ্টান্ত খুব কম।
ভিন্ন চিত্র রয়েছে বিরোধী রাজনীতিকদের দুর্নীতির মামলায়। দুদকের অনুসন্ধান চলছে বিএনপির প্রায় অর্ধশত কেন্দ্রীয় নেতার বিরুদ্ধে।
দুদকের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, অপরাধ প্রমাণিত হলে কাউকেই ছাড় দেয়া হচ্ছে না। দুর্নীতির ব্যাপারে কাউকেই দায় মুক্তি দেয়া হবে না। তবে বর্তমানে যে মামলা করা হবে সে মামলার শাস্তির নিশ্চিত করতে হবে বলেন তিনি।
দুদকের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান বলেন, অধীক সংখ্যক দুর্নীতি পরায়ন ব্যাক্তি যদি জেলে যায় দীর্ঘ মেয়াদে, তাহলেই কেবল দুর্নীতি দমন কমিশনের যে কার্যক্রম তার সুফল দেশ পাবে মানুষ পাবে। দুর্নীতিগ্রস্তদের শাস্তি নিশ্চিত করতে পারলেই দুর্নীতি কমবে বলে তিনি মনে করেন।